১৪০০ সাল

কবি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আজি হতে শতবর্ষ পরে
কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি
কৌতুহলভরে,
আজি হতে শতবর্ষ পরে!
আজি নব বসন্তের প্রভাতের আনন্দের
লেশমাত্র ভাগ,
আজিকার কোনো ফুল, বিহঙ্গের কোনো গান,
আজিকার কোনো রক্তরাগ-
অনুরাগে সিক্ত করি পারিব কি পাঠাইতে
তোমাদের করে,
আজি হতে শতবর্ষ পরে?

তবু তুমি একবার খুলিয়া দক্ষিণদ্বার
বসি বাতায়নে
সুদূর দিগন্তে চাহি কল্পনায় অবগাহি
ভেবে দেখো মনে-
একদিন শতবর্ষ আগে
চঞ্চল পুলকরাশি কোন্ স্বর্গ হতে ভাসি
নিখিলের মর্মে আসি লাগে,
নবীন ফাল্গুনদিন সকল-বন্ধন-হীন
উন্মত্ত অধীর,
উড়ায়ে চঞ্চল পাখা পুষ্পরেণুগন্ধমাখা
দক্ষিণসমীর
সহসা আসিয়া ত্বরা রাঙায়ে দেয়েছে ধরা
যৌবনের রাগে,
তোমাদের শতবর্ষ আগে।
সেদিন উতলা প্রাণে, হৃদয় মগন গানে,
কবি একা জাগে-
কত কথা পুষ্প প্রায় বিকশি তুলিতে চায়
কত অনুরাগে,
একদিন শতবর্ষ আগে।

আজি হতে শতবর্ষ পরে
এখন করিছে গান সে কোন্ নুতন কবি
তোমাদের ঘরে!
আজিকার বসন্তের আনন্দ-অভিবাদন
পাঠায়ে দিলাম তাঁর করে।
আমার বসন্তগান তোমার বসন্তদিনে
ধ্বনিত হউক ক্ষণতরে-
হৃদয়স্পন্দনে তব, ভ্রমরগুঞ্জনে নব,
পল্লবমর্মরে,
আজি হতে শতবর্ষ পরে।।

Posted in আমার প্রিয় কিছু বাংলা কবিতা | এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

আমাদের ছোট নদী

কবি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমাদের ছোটো নদী চলে বাঁকে বাঁকে
বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে।
পার হয়ে যায় গোরু, পার হয় গাড়ি,
দুই ধার উঁচু তার, ঢালু তার পাড়ি।

চিক্ চিক্ করে বালি, কোথা নাই কাদা,
একধারে কাশবন ফুলে ফুলে সাদা।
কিচিমিচি করে সেথা শালিকের ঝাঁক,
রাতে ওঠে থেকে থেকে শেয়ালের হাঁক।

আর-পারে আমবন তালবন চলে,
গাঁয়ের বামুন পাড়া তারি ছায়াতলে।
তীরে তীরে ছেলে মেয়ে নাইবার কালে
গামছায় জল ভরি গায়ে তারা ঢালে।

সকালে বিকালে কভু নাওয়া হলে পরে
আঁচল ছাঁকিয়া তারা ছোটো মাছ ধরে।
বালি দিয়ে মাজে থালা, ঘটিগুলি মাজে,
বধূরা কাপড় কেচে যায় গৃহকাজে।

আষাঢ়ে বাদল নামে, নদী ভর ভর
মাতিয়া ছুটিয়া চলে ধারা খরতর।
মহাবেগে কলকল কোলাহল ওঠে,
ঘোলা জলে পাকগুলি ঘুরে ঘুরে ছোটে।
দুই কূলে বনে বনে পড়ে যায় সাড়া,
বরষার উৎসবযেজেগে ওঠে পাড়া।।

Posted in আমার প্রিয় কিছু বাংলা কবিতা | ১ টি মন্তব্য

তোমার কাছে নাই

অনেকদিন পরে আমার আজ হয়েছে মনে,
ছোটবেলায় লুকিয়ে র’তাম আমা’ ঘরের কোণে।
ছোট বোনের সাথে আমি কথা বলতাম বনে,
আমি যে ঘরের কোণে কেউ না যেনো জানে।

হঠাৎ আমি চমকে উঠি শব্দ আসে কানে,
বুঝতে আমি পারি না কিছু, “এর কি আছে মানে?”
ছোটবোনটা এমন সময় ঘরের আরেক কোণে,
বলল সে যে একমাত্র মা-ই সব জানে।

মা জানলে তবে তো আর বলার কিছু নাই,
তাইলে আমি হাতমুখ ধুয়ে ইস্কুলেতে যাই।
বাবা এসে প্রশ্ন করে -“তোমার কি চাই?”
উত্তরে আমি বলি- “বাবা, আমি যা চাই, তা তো তোমার কাছে নাই।”

Posted in কবিতা | Tagged , | 2 টি মন্তব্য

আবার আসিব ফিরে

কবি: জীবনানন্দ দাস

আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে – এই বাংলায়
হয়তো মানুষ নয় – হয়তো বা শাঁখচিল শালিকের বেশে,
হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিঁকের নবান্নের দেশে
কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব কাঁঠাল ছায়ায়।
হয়তো বা হাঁস হবো – কিশোরীর – ঘুঙুর রহিবে লাল পায়
সারাদিন কেটে যাবে কলমীর গন্ধভরা জলে ভেসে ভেসে।
আবার আসিব আমি বাংলার নদী মাঠ ক্ষেত ভালোবেসে
জলঙ্গীর ঢেউ এ ভেজা বাংলারি সবুজ করুণ ডাঙ্গায়।

হয়তো দেখিবে চেয়ে সুদর্শন উড়িতেছে সন্ধ্যার বাতাসে।
হয়তো শুনিবে এক লক্ষীপেঁচা ডাকিতেছে শিমুলের ডালে।
হয়তো খৈয়ের ধান সরাতেছে শিশু এক উঠানের ঘাসে।
রূপসার ঘোলা জলে হয়তো কিশোর এক সাদা ছেঁড়া পালে
ডিঙ্গা বায় – রাঙ্গা মেঘে সাঁতরায়ে অন্ধকারে আসিতেছে নীড়ে,
দেখিবে ধবল বক; আমারে পাবে তুমি ইহাদের ভীড়ে।

Posted in আমার প্রিয় কিছু বাংলা কবিতা | Tagged , , | এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

বনলতা সেন

কবি: জীবনানন্দ দাস

হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে,
সিংহল-সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয়-সাগরে
অনেক ঘুরেছি আমি; বিম্বিসার-অশোকের ধূসর জগতে
সেখানে ছিলাম আমি; আরও দূর অন্ধকারে বিদর্ভ নগরে;
আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন,
আমারে দু-দন্ড শান্তি দিয়েছিল নাটোরের বনলতা সেন ।

চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,
মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য; অতিদূর সমুদ্রের পর
হাল ভেঙ্গে যে নাবিক হারায়েছে দিশা
সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি-দ্বীপের ভিতর,
তেমনি দেখেছি তারে অন্ধকারে; বলেছে সে, ‘এতদিন কোথায় ছিলেন?’
পাখির নীড়ের মত চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন।

সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মত
সন্ধ্যা আসে; ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে চিল;
পৃথিবীর সব রঙ নিভে গেলে পান্ডুলিপি করে আয়োজন
তখন গল্পের তরে জোনাকির রঙে ঝিলমিল;
সব পাখি ঘরে আসে – সব নদী – ফুরায় এ জীবনের সব লেনদেন;
থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন।

Posted in আমার প্রিয় কিছু বাংলা কবিতা | এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

কান্ডারী হুশিয়ার!

দুর্গম গিরি, কান্তার-মরু, দুস্তর পারাবার
লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি-নিশীথে, যাত্রীরা হুশিয়ার!

দুলিতেছে তরি, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ,
ছিঁড়িয়াছে পাল, কে ধরিবে হাল, আছে কার হিম্মৎ?
কে আছ জোয়ান হও আগুয়ান হাঁকিছে ভবিষ্যৎ।
এ তুফান ভারী, দিতে হবে পাড়ি, নিতে হবে তরী পার।

তিমির রাত্রি, মাতৃমন্ত্রী সান্ত্রীরা সাবধান!
যুগ-যুগান্ত সঞ্চিত ব্যথা ঘোষিয়াছে অভিযান।
ফেনাইয়া উঠে বঞ্চিত বুকে পুঞ্জিত অভিমান,
ইহাদের পথে নিতে হবে সাথে, দিতে হবে অধিকার।

অসহায় জাতি মরিছে ডুবিয়া, জানে না সন্তরন
কান্ডারী! আজ দেখিব তোমার মাতৃমুক্তি পন।
হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?
কান্ডারী! বল, ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মার

গিরি সংকট, ভীরু যাত্রীরা গুরু গরজায় বাজ,
পশ্চাৎ-পথ-যাত্রীর মনে সন্দেহ জাগে আজ!
কান্ডারী! তুমি ভুলিবে কি পথ? ত্যজিবে কি পথ-মাঝ?
করে হানাহানি, তবু চলো টানি, নিয়াছ যে মহাভার!

কান্ডারী! তব সম্মুখে ঐ পলাশীর প্রান্তর,
বাঙালীর খুনে লাল হল যেথা ক্লাইভের খঞ্জর!
ঐ গঙ্গায় ডুবিয়াছে হায়, ভারতের দিবাকর!
উদিবে সে রবি আমাদেরি খুনে রাঙিয়া পূনর্বার।

ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয়গান,
আসি অলক্ষ্যে দাঁড়ায়েছে তারা, দিবে কোন্ বলিদান
আজি পরীক্ষা, জাতির অথবা জাতের করিবে ত্রাণ?
দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, কান্ডারী হুশিয়ার!

Posted in আমার প্রিয় কিছু বাংলা কবিতা | Tagged , , , , | এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

টিন এজারস্

ছেলেটির নাম রুবেল. খুব শান্ত-শিষ্ট একটি ছেলে. কথা বলে খুব কম. চরিত্র খুব ভালো. পড়ালেখায় ও খুব ভালো. খেলাধুলা করে খুব কম.

কোচিং করার জন্য ভালো একটা কোচিং এর খোজ শুরু করে একদিন. বেশি দিন লাগে না. পেয়ে যাই. ভর্তি ও হয়ে যায় সাথে সাথে. তো ক্লাস ও চলে ঠিক মত. পড়ালেখা, অ্যাটেনডেন্টস্, চারিত্রিক বৈশিষ্ট, অন্যদের চাইতে একটু ভিন্ন থাকায় অল্প ক’দিনে ক্লাস্সের সকলের মধ্যমনি হয়ে ওঠে সে. ক্লাস এইটের ব্যাচে ছেলেদের মধ্যে সবচেয়ে শান্ত সে.

পরীক্ষা শুরু হলো ক’দিনের মধ্যেই. একে একে সবগুলো পরীক্ষা ওভার হয়ে গেল. সপ্তাহ খানিক পর রেসাল্ট বের হলো. সবার চাইতে হায়েস্ট মার্ক রুবেলের. এভাবে এক সময় ভালো একটা অবস্থান তৈরী করে নিল রুবেল.

মাসখানিক কেটে গেল এভাবে. একদিন সেই কোচিং এর ই ক্লাস এইটের ব্যাচে একটা মেয়ে ভর্তি হয়. ভর্তির পর কয়েক দিনে বোঝা যায় যে, মেয়েটির চরিত্র খুব ই ভালো. অন্যদের সাথে একটু কম মিশে. কথাও বলে কম কম. ক্লাস এ একটু বেশি চুপচাপ থাকতে দেখা যায় তাকে. মেয়েটির নাম কাজল. অত্যন্ত ভদ্র স্বভাবের মেয়ে. ছেলেদের সাথে একটু কম, অকারণে কথা বলে না দেখে অন্য মেয়েরা কাজল কে একটু কম পছন্দ করে. এ নিয়ে অবস্য কাজলের মনে কোনো দুক্ষ নেই. সে থাকে তার মত. কয়েকদিনের ভেতরেই নিজের পরিবেশটা তৈরী করে নেয় সে.

এভাবে চলতে থাকে দিনের পর দিন. মাসের পর মাস. পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হয়ে যায় এর মধ্যে. ফলাফল ও বের হয়. দেখা যায়, রুবেল যা পেয়েছে, কাজল তারচেয়ে পাচ বা সাত কম পেয়েছে. আবার কাজল যা পেয়েছে, রুবেল তারচেয়ে চার বা পাচ কম পেয়েছে. ফলে তাদের দুজনের মধ্যে একরকম কমপিটিসন লেগে যায়. দুজনেই চায় একে অপরের চেয়ে বেশি পেতে. এভাবে চলে কয়েকদিন.

কোচিং এর সার রাও চান ওরা দুজনে কম্পিটিশন এ লাগুক. রুবেল কাজলের চেয়ে বেশি পেলে, কাজল ধমক খায় সার দের কাছে. আবার কাজল রুবেলের চেয়ে বেশি পেলে রুবেল ধমক খায় সার দের কাছে. এভাবে তাদের দুজনের মধ্যে একরকম বিরূপ ধারণা জন্ম নেয়.

সেই বিরূপ ধারণা আস্তে আস্তে বদলে যায়. রূপ নেয় ভিন্ন ধরনের.

একদিন রুবেলের এক সহপাঠি তাকে বলে যে, কাজল তাকে ভালবাসে. অর্থাত রুবেল জানতে পারে যে, কাজল তাকে মনপ্রাণ উজার করে ভালবাসে. এদিকে, একথা জানার পর কাজলের প্রতি রুবেল ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পরে. কাজল কে পাবার এক বিরাট স্বপ্ন তার বুকে বাসা বাধে. তবে সে মুখ খুলে সেকথা কাজল কে বলে না. নিজের মনে পুষতে থাকে সে স্বপ্ন, সে আশা.

মেয়েদের মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে চলে আসে কাজলের নাম এবং ছেলেদের মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে চলে আসে রুবেলের নাম. দুজনেই ভালো ঘরের সন্তান. টাকাকড়ি খারাপ নেয় বললেই চলে. সবদিক থেকেই দুজন একই কাঠগড়ায়, একই মানদন্ডে.

একদিন কাজলের এক সহপাঠি জানায় যে, রুবেল তাকে মনপ্রাণ দিয়ে ভালবাসে. এ কথা জানতে পেরে কাজলের মনে এক ভাবান্তর হয়. সেও এক পর্যায়ে রুবেলের প্রতি দুর্বলতা অনুভব করে. তবে ভাব-সাবে তা প্রকাশ করে না.

চলবে…

Posted in প্রবন্ধ | এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

সংরক্ষিত: অসীম শূণ্যতা

এই বিষয়বস্তু পাসওয়ার্ড দ্বারা সুরক্ষিত। এটি দেখতে আপনার পাসওয়ার্ড দিন:

Posted in কবিতা | Tagged , , | মন্তব্য দেখতে আপনার পাসোয়ার্ড প্রদান করুন।

বলব না

বলব না তোমাকে ভালোবাসি,
বলব না তুমি মোর সব,
তবু জেনে রেখো, তুমি বন্ধু আমার,
আমি তোমায় ভালোবাসি।

জীবনের সব মায়া ছেড়ে আমি চলে আসব না,
জীবনের কোনো দুঃখ কষ্টে আমি তোমায় জড়াব না,
তবু জিজ্ঞেস করি, বন্ধু তোমায়,
তুমি থাকবে কি মোর পাশে পাশে সব সময়।

বলব না তোমাকে ভালোবাসি,
বলব না তুমি মোর সব,
তবু জেনে রেখো, তুমি বন্ধু আমার,
আমি তোমায় ভালোবাসি।

জীবনের কোনো মায়ায় আমি তোমায় ভুলব না,
কোনো কিছুর বিনিময়ে আমি তোমায় হারাব না,
তবু বুঝে নিও তুমি বন্ধু আমার,
আমি তোমায় ভালোবাসি।

Posted in কবিতা | Tagged , , | এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

বন্ধু

ভুলে যাও সব দুস্সহ স্মৃতি,
তুমি ভুলে যাও সব কষ্ট,
ভুলে যাও সব হাহাকার,
মনে রেখো তুমি আমার.

জীবনের শত কষ্ট দু’হাতে সরিয়ে,
আমি আসব তোমার কাছে,
তুমি যেও না আমায় এড়িয়ে.

আমি তোমাকে চিনেছি এক মানুষ হিসেবে,
সাথে বুঝেছি তুমি বন্ধু,
হাত বাড়িয়েছ তুমি আমার দিকে,
তুমি সত্তি মোর বন্ধু.

জীবনের শত আধার দু’হাতে সরিয়ে,
তুমি আসবে আমার কাছে,
আমি দেব না তোমায় ফিরিয়ে.

রচনাকাল: ৭/০৪/২০১০

Posted in কবিতা | Tagged , , | এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান