ছেলেটির নাম রুবেল. খুব শান্ত-শিষ্ট একটি ছেলে. কথা বলে খুব কম. চরিত্র খুব ভালো. পড়ালেখায় ও খুব ভালো. খেলাধুলা করে খুব কম.
কোচিং করার জন্য ভালো একটা কোচিং এর খোজ শুরু করে একদিন. বেশি দিন লাগে না. পেয়ে যাই. ভর্তি ও হয়ে যায় সাথে সাথে. তো ক্লাস ও চলে ঠিক মত. পড়ালেখা, অ্যাটেনডেন্টস্, চারিত্রিক বৈশিষ্ট, অন্যদের চাইতে একটু ভিন্ন থাকায় অল্প ক’দিনে ক্লাস্সের সকলের মধ্যমনি হয়ে ওঠে সে. ক্লাস এইটের ব্যাচে ছেলেদের মধ্যে সবচেয়ে শান্ত সে.
পরীক্ষা শুরু হলো ক’দিনের মধ্যেই. একে একে সবগুলো পরীক্ষা ওভার হয়ে গেল. সপ্তাহ খানিক পর রেসাল্ট বের হলো. সবার চাইতে হায়েস্ট মার্ক রুবেলের. এভাবে এক সময় ভালো একটা অবস্থান তৈরী করে নিল রুবেল.
মাসখানিক কেটে গেল এভাবে. একদিন সেই কোচিং এর ই ক্লাস এইটের ব্যাচে একটা মেয়ে ভর্তি হয়. ভর্তির পর কয়েক দিনে বোঝা যায় যে, মেয়েটির চরিত্র খুব ই ভালো. অন্যদের সাথে একটু কম মিশে. কথাও বলে কম কম. ক্লাস এ একটু বেশি চুপচাপ থাকতে দেখা যায় তাকে. মেয়েটির নাম কাজল. অত্যন্ত ভদ্র স্বভাবের মেয়ে. ছেলেদের সাথে একটু কম, অকারণে কথা বলে না দেখে অন্য মেয়েরা কাজল কে একটু কম পছন্দ করে. এ নিয়ে অবস্য কাজলের মনে কোনো দুক্ষ নেই. সে থাকে তার মত. কয়েকদিনের ভেতরেই নিজের পরিবেশটা তৈরী করে নেয় সে.
এভাবে চলতে থাকে দিনের পর দিন. মাসের পর মাস. পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হয়ে যায় এর মধ্যে. ফলাফল ও বের হয়. দেখা যায়, রুবেল যা পেয়েছে, কাজল তারচেয়ে পাচ বা সাত কম পেয়েছে. আবার কাজল যা পেয়েছে, রুবেল তারচেয়ে চার বা পাচ কম পেয়েছে. ফলে তাদের দুজনের মধ্যে একরকম কমপিটিসন লেগে যায়. দুজনেই চায় একে অপরের চেয়ে বেশি পেতে. এভাবে চলে কয়েকদিন.
কোচিং এর সার রাও চান ওরা দুজনে কম্পিটিশন এ লাগুক. রুবেল কাজলের চেয়ে বেশি পেলে, কাজল ধমক খায় সার দের কাছে. আবার কাজল রুবেলের চেয়ে বেশি পেলে রুবেল ধমক খায় সার দের কাছে. এভাবে তাদের দুজনের মধ্যে একরকম বিরূপ ধারণা জন্ম নেয়.
সেই বিরূপ ধারণা আস্তে আস্তে বদলে যায়. রূপ নেয় ভিন্ন ধরনের.
একদিন রুবেলের এক সহপাঠি তাকে বলে যে, কাজল তাকে ভালবাসে. অর্থাত রুবেল জানতে পারে যে, কাজল তাকে মনপ্রাণ উজার করে ভালবাসে. এদিকে, একথা জানার পর কাজলের প্রতি রুবেল ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পরে. কাজল কে পাবার এক বিরাট স্বপ্ন তার বুকে বাসা বাধে. তবে সে মুখ খুলে সেকথা কাজল কে বলে না. নিজের মনে পুষতে থাকে সে স্বপ্ন, সে আশা.
মেয়েদের মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে চলে আসে কাজলের নাম এবং ছেলেদের মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে চলে আসে রুবেলের নাম. দুজনেই ভালো ঘরের সন্তান. টাকাকড়ি খারাপ নেয় বললেই চলে. সবদিক থেকেই দুজন একই কাঠগড়ায়, একই মানদন্ডে.
একদিন কাজলের এক সহপাঠি জানায় যে, রুবেল তাকে মনপ্রাণ দিয়ে ভালবাসে. এ কথা জানতে পেরে কাজলের মনে এক ভাবান্তর হয়. সেও এক পর্যায়ে রুবেলের প্রতি দুর্বলতা অনুভব করে. তবে ভাব-সাবে তা প্রকাশ করে না.
চলবে…